কুয়াকাটা প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালীর মহিপুরে রায়হান (২২) নামের এক যুবককে অপহরণ করে নির্যাতন হয়েছে। নির্যাতনকারীরা তাকে পেটানোর দৃশ্য ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রায়হান মহিপুরের নিজ বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়। এর একদিন পর শুক্রবার তাকে একটি নির্জন স্থানে হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানোর দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভিডিওটি রায়হানের পরিবারের নজরে আসে। এ ঘটনা নির্যাতিত রায়হানের বাবা কাশেম শুক্রবার বিকেলে চারজনের নাম উল্লেখ করে মহিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু অপহৃত রায়হানকে পুলিশ এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। অভিযুক্তরা হলেন একই এলাকার ইমাম সিকদার, মসিউর, ইমরান ও বিপ্লব শীল। তবে পুলিশ বলছে, রায়হান মাদক পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্য। ওই সিন্ডিকেটের অপর এক সদস্যের মোটরসাইকেল অন্যত্র বিক্রি করা নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হয়। সেই মোটরসাইকেল উদ্ধারকে কেন্দ্র করে রায়হানকে মারধরের সময় ভিডিও করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। রায়হানের বাবার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রায়হান তার শ্বশুর বাড়ি বরগুনা জেলার তালতলি যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। ওইদিন সন্ধ্যায় রায়হানের স্ত্রী মহিমা তাকে ফোন করে অবস্থান জানতে চাইলে মোবাইলের অপর প্রান্ত থেকে ধস্তাধস্তির আওয়াজ শোনেন এবং এর কিছুক্ষণ পরে ফোন বন্ধ করে দেন। এদিকে, ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখা যায়, অপহৃত রায়হানের হাত-পা গাছের সঙ্গে বেঁধে ৪-৫ জন যুবক তাকে গালাগাল ও লাঠিপেটা করছেন। পেশায় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক রায়হানের বাবা জেলে কাশেম মিয়া বলেন, থানায় অভিযোগে উল্লেখ করা আসামিদের মধ্যে ইমাম সিকদার তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে আমাকে হুমকি দিয়ে জানিয়েছে ‘রায়হানকে ছেড়ে দিয়েছি, বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে অবস্থা খারাপ হবে’। তবে রায়হানকে এখনও পাইনি। মহিপুর থানার ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়ে জড়িতদের আটক এবং রায়হানকে উদ্ধারের সবরকম চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। তিনি বলেন, রায়হান মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। ওই মাদকপাচার সিন্ডিকেটের অপর এক সদস্যের মোটরসাইকেল নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করায় নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। সেই মোটরসাইকেল উদ্ধার করতে গিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। রায়হানকে উদ্ধার করতে পারলে বিস্তারিত জানা যাবে।
Leave a Reply